ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম পার্ট – 01

আজ আলোচনায় আমরা দেখব ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সংজ্ঞা, ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর উদ্দেশ্যবলী, ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর সুবিধা ও অসুবিধা, ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর প্রয়োগ ক্ষেত্র, এবং এর সাথে সংম্পর্কিত কিছু সংজ্ঞা।
তাহলে শুরু করা যাক।
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আসলে কি?
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হল পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কতকগুলো ডাটা এবং ঐ সমস্ত ডাটাতে প্রবেশ করে সুবিধাজনকভাবে ও দক্ষতার সাথে তাদেরকে ম্যানিপুলেট করার জন্য ব্যবহৃত একসেট প্রোগ্রামের সমষ্টি।
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বিভিন্ন অংশ রয়েছে, যেমন
 ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর কাজ হল ডাটাবেস তৈরীর পর একে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করার সুবিধা প্রদান করা। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করার প্রক্রিয়া নিচে দেওয়া হল।



প্রবেশাধিকার রেস্ট্রিকশন বা শর্তানুযায়ী একজন ব্যবহারকারী তার প্রয়োজনীয় DBMS কে Information  এর জন্য রিকুয়েস্ট অনুরোধ করে। DBMS  সে রিকুয়েস্ট বিবেচনা করে ডাটাবেস থেকে ব্যবহারকারীর কাঙিক্ষত ফলাফল ব্যবহারকারীকে প্রদান করে। কিন্তু যদি ব্যবহারকারীর নির্দেশ ভুল হয়ে থাকে তাহলে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কোন তথ্য প্রদান করবে না।
নিচে একজন ব্যবহারকারীর সাথে ডাটাবেসের সংযোগ স্থাপন প্রক্রিয়া দেখানো হল।



ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর উদ্দেশ্যাবলী
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এমন একটি সফটওয়্যার সিস্টেম, যার সাহায্যে ডাটাবেসে এ জমাকৃত ডাটাকে সূক্ষরূপে ম্যানিপুলেট করা সম্ভব। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর উদ্দেশ্য হল কম্পিউটার সিস্টেমে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা, যাতে ডাটাবেসে অত্যন্ত সুবিধাজনক ভাবে ও দক্ষতার সাথে প্রচুর পরিমানে তথ্য জমা ও উত্তোলন করা যায়।
 (ক) ডাটাতে সহজে প্রবেশে এর ব্যবস্থা করা।
(খ) ডাটা আইসোলেশন জনিত অসুবিধা দূর করা।
(গ) ইন্টিগ্রিটি দূরীকরণ।
(ঘ) ডাটা রিডানডেন্সি ও ইনকনসিসটেন্সি।
(ঙ)  অ্যাটমিসিটি অসুবিধা দূর করা।
(চ) একই সময়ে ডাটাবেসে প্রবেশের অসুবিধা দূরীকরণ।
(ছ) ডাটা নিরাপত্তা প্রদান করা।
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর সুবিধা ও অসুবিধা।
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সুবিধা:
১। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে ডাটা প্রবেশ অত্যন্ত সহজ।
২। এতে ডাটা ডুপলিকেট হয় না, ফলে স্টোরেজ ডিভাইসে জায়গা কম লাগে।
৩। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এ ডাটা নিরাপত্তা খুবই বেশি।
৪। এতে অ্যাটমিসিটি অসুবিধা নেই।
৫। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এ অত্যন্ত শক্তিশালী ব্যাকআপ ও রিকভারি সিস্টেম আছে, যার ফলে সিস্টেমের বিশ্বস্ততা বেড়ে যায়।
৬। এটি একটি স্ট্যাকচারড সিস্টেম।
৭। এতে ডাটা আইসোলেশন সমস্যা নাই।
৮। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর ক্ষেত্রে ডাটা ইনকনসিসেটেন্সি বিরাজ করে না।
৯। এতে ডাটা ইনটিগ্রিটি এর নিশ্চয়তা থাকে।
১০। এতে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা বিদ্যমান। ফলে ডাটা ডুপলিকেট হয় না।
১১। এতে ডাটা তল্লাশি করা সহজ।
১২। এতে ডাটাবেস আপডেট করা সহজ।
১৩। এতে ডাটা ম্যানিপুলেশন করা সহজ।
১৪। এতে বিভিন্ন ফাইল ফরম্যাট থাকে না।
১৫। এতে অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম রচনা করা সহজ।
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অসুবিধা:
১। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সম্পূর্ণরূপে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কখনো কখনো বেশ অসুবিধার সৃষ্টি হয়।
২। এতে ব্যবহৃত হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার দাম বেশি পড়ে এবং ডাটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে খরচ বেশি হয়ে থাকে।
৩। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এ ক্ষেত্রে ব্যাকআপ ও রিকভারি ব্যবস্থা আছে। কিন্তু এই ব্যাকআপ ও রিকভারির জন্য সিস্টেমের জটিলতা বুদ্ধি পায়।
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর ব্যবহার।
বর্তমান বিশ্বে শিল্পক্ষেত্রে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর ব্যবহার ব্যাপক। দিনদিন এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। ছোট ছোট কোম্পানি থেকে শুরু করে বৃহদ্বাকা কোম্পানিগুলো তাদের দৈনন্দিন ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে।
(ক) অফিস-আদালত: অফিস- আদালতে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের তথ্য সংরক্ষণ, ম্যানিপুলেশন ইত্যাদি কাজে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করছে।
(খ) এয়ারলাইন্স ও রেলওয়ে: এয়ারলাইন্স ও রেলওয়ে টিকেটিং, টাইম সিডিউলিং, সিট রিজারভেশন ইত্যাদি কাজে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।
(গ) ক্রয়-বিক্রয়: কাস্টমার, প্রোডাক্ট, ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য, পণ্য তালিকা প্রণয়ন, রিজারর্ভেন ব্যবস্থা, অনলাইন লেনদেনের এর কাজে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।
(ঘ) নির্বাচন কমিশন: নির্বাচন কমিশনের তফসিলভুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সংরক্ষণ,সংশোধন, ছবিযুক্ত আইডি কার্ড, প্রার্থীর তালিকা, সঠিক ভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।
(ঙ) মিল-ফ্যাক্টরি: মিল-ফ্যাক্টরি উৎপাদিত পণ্যের হিসাব, সরবরাহ,অর্ডার নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনার জন্য ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।
(চ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং তাদের বোর্ডসমূহ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংরক্ষণ, রেজিস্ট্রেশন,OMR, ICR,  এর মাধ্যমে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন, অনলাইন পরীক্ষার তথ্য, অনলাইন গ্রন্থাগার ইত্যাদি কাজে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।
(ছ) ব্যাংক ,বীমা, স্টক মার্কেট: ব্যাংক, বীমা, স্টক মার্কেট কাস্টমার, অ্যাকাইন্ট ব্যালেন্স, লোন, ডিপোজিট,ট্রানস্যাকশন, স্টক বন্ড ক্রয়-বিক্রয়, শেয়ার মার্কেট অনলাইনে ট্রের্ডিং ইত্যাদি  কাজে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।
(জ) হাসপাতাল: হাসপাতালে রোগীদের তথ্য,কর্মীদের সময় সিডিউল ইত্যাদি কাজে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।
(ঝ) কমিউনিকেশন সেক্টর: টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে টেলিফোন ও মোবাইল ইত্যাদির কাজে কলের হিসাব রাখা,মাসিক বিল তৈরী, প্রি-পেইড কার্ডের ব্যালেন্স সংরক্ষণ কমিউনিকেশন তথ্য ইত্যাদি কাজে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।
(ঞ) ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ট্র্যানজ্যাকশন: ডেবিট/ক্রেডিট সংক্রান্ত তথ্য কার্ডের মাধ্যমে ট্র্যানজ্যাকশন রক্ষণাবেক্ষণ, মাসিক স্টেটমেন্ট তৈরী ইত্যাদি কার্যক্রমে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে।

কয়েকটি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এবং উত্তর
ডাটা বলতে কি বুঝায়?
উঃ ডাটা হল ঐ সমস্ত উপাদান- উপকরণ, যাদেরকে প্রক্রিয়া করলে ইনফরমেশন বা তথ্য পাওয়া যায়। অন্যভাবে বলা যায় ডাটা হল ঐ সমস্ত বাস্তব বস্তু বা ঘটনা যাদেরকে প্রক্রিয়া করলে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে কম্পিউটারে ব্যবহার উপযোগী যে কোন তথ্য বা ইনফরমেশনকেই ডাটা বলে।
ফাইল বলতে কি বুঝ?
উঃ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কিছু সংখ্যাক তথ্য অথবা রেকর্ড কে যদি একটি ইউনিট হিসাবে বিচেনা করা যায় তবে তাকে ফাইল বলে।
রেকর্ড কি?
উঃ ডাটাবেসে এ সম্পর্কযুক্ত অনেকগুলো ফিল্ড কে একত্রে রেকর্ড বলে।
ডাটাবেস বলতে কি বুঝায়?
উঃ কোন একটি কম্পিউটার সিস্টেমে জমাকৃত সর্বমোট স্ট্রাকচারড ডাটার সমষ্টিকেই ডাটাবেস বলে।

Comments

Popular posts from this blog

কৃষি বিষয়ক সম্পর্কিত ABBREVIATION কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষা জন্য বাছাই করা সাজেশন

Bijoy Bayanno 2014 :: 1 Click Download বিজয় বাহান্নো